Dark Mode
Image
  • Monday, 28 October 2024
৮ কেজির পেঁপে চাষ হচ্ছে দেশে - ৬ মাসেই ফলন

৮ কেজির পেঁপে চাষ হচ্ছে দেশে - ৬ মাসেই ফলন

জাপানে পিএইচডি করে দেশে ফিরে কৃষিতে মনোনিবেশ করা ড. নজরুল ইসলাম তার খামারে বিস্ময়কর এক পেঁপে ফলিয়েছেন।  জায়ান্ট পার্ল যার নাম, যেটির একটিই ওজনে সাত থেকে আট কেজি হয়ে থাকে। ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে ড. নজরুলের খামারে ফলন হওয়া পেঁপেটি কোনো হাইব্রিড বা বিদেশি জাতের পেঁপে নয় সম্পূর্ণ দেশি জাতের। ছোট আকৃতির এই পেঁপে গাছে ধরছে ৩/৪ কেজি থেকে শুরু করে ৭/৮ কেজি ওজনের পেঁপে। এলাকার কৃষকদের অনেকেই এখন ড. নজরুলের কাছ থেকে তার ফলানো বিস্ময়কর এই পেঁপেগাছের চারা ও বীজ সংগ্রহ করছেন।

 

স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তারাও ইতিমধ্যে ড. নজরুলের খামার পরিদর্শন করে পেঁপেগুলো দেখেছেন। তারা বলেছেন, জায়ান্ট পার্ল পেঁপে আকৃতিতে যেমন অনেক বড়, তেমনি খেতেও সুস্বাদু। কৃষকরা এটি আবাদ করলে লাভবান হবেন। সাধারণ পেঁপের তুলনায় ফলন অনেক বেশি হয়। এই পেঁপে বাজারে থাকা অন্য পেঁপের মতো সবজি হিসেবেও যেমন খাওয়া যায়, আবার পাকা ফল হিসেবেও বিক্রি করা যাবে। আকারের মতোই স্বাদের হওয়ায় এই পেঁপেটি আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে বলে মনে করছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা।

 

ড. নজরুল ইসলাম পড়ালেখা করেছেন ফিশারিজ বিষয়ে। কিন্তু পরে জাপানে পিএইচডি করেন সমুদ্রবিজ্ঞানে। দেশে ফিরে এসে যোগ দেন জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) একটি প্রকল্পে। করোনাকালে প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে গেলে গ্রামে ফিরে কৃষিকাজ শুরুর সিদ্ধান্ত নেন। এরপর কোটচাঁদপুরে গড়ে তোলেন কৃষি খামার। ১০ বিঘা জমির ওপর গড়ে তোলা এই খামারে রয়েছে দুটি পুকুরও। যার একটিতে মাছ, আরেকটিতে হয় মুক্তা চাষ। এই দুটি পুকুর খনন করতে গিয়ে তোলা মাটিতে জায়ান্ট পার্ল পেঁপের আবাদ করছেন ড. নজরুল।

 

 

কীভাবে এলো এই পেঁপে


ড. নজরুল ইসলাম পড়ালেখা করেছেন ফিশারিজ নিয়ে। কিন্তু পরে জাপানে পিএইচডি করেন সমুদ্র বিজ্ঞান নিয়ে। পরে দেশে ফিরে এসে যোগ দেন জাইকার একটি প্রকল্পে। করোনার সময় প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে গেলে গ্রামে ফিরে কৃষিকাজ শুরুর সিদ্ধান্ত নেন। এরপর কোটচাঁদপুরে গড়ে তুলেছেন কৃষি খামার। খামারের মধ্যে পুকুর খনন করে মাছ চাষ করছেন। সেই পুকুর থেকে তোলা মাটিতে তিনি আবাদ করছেন জায়ান্ট পার্ল পেঁপের।
"এলাকারই একজন কৃষকের কাছ থেকে বীজটি পেয়েছিলাম আমি। তিনি যথাযথভাবে আবাদ করতে পারেননি বলে ফলন পাননি। আমি খামারের পুকুরের পাড়ের উর্বর মাটিতে আবাদ করলাম। বিশেষ কিছু কৌশল অবলম্বন করে সাফল্য পেলাম," বলছিলেন তিনি।

মি. ইসলাম বলেন বাজারের হাইব্রিড পেঁপেও দেড় কেজি ওজনের বেশি সাধারণত হয় না কিন্তু আমার এই পেঁপে একটি ৭/৮ কেজি পর্যন্ত ওজনের হয়। কৃষি কর্মকর্তা মো. মহাসীন আলীর মতে আকারের মতোই স্বাদের হওয়ায় এই পেঁপেটি আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।

 

কীভাবে ফলন ভালো হয়

 

ড. নজরুল ইসলাম বলছেন, প্রথমত মাটির মান খুব ভালো হতে হবে আর জৈব সার ব্যবহার করতে হবে। তিনি বলেন, পুকুরের তোলা মাটি সাধারণত অনেক বেশি উর্বর হয় বলে তিনি পেঁপেটি আবাদের জন্য সেই মাটিকেই বেছে নিয়েছেন।

"পেঁপে চাষ সহজ মনে হলেও আসলে কিন্তু ততটা সহজ ব্যাপার না। আমি কখনো রাসায়নিক সার ব্যবহার করিনি। বরং জৈব সার ব্যবহার করেছি," বলছিলেন তিনি কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, পেঁপে চাষে সবসময়ই বিশেষ যত্ন নেয়ার পাশাপাশি অনেক ছোট ছোট বিষয় খেয়াল করতে হয়। পেঁপে চাষের জন্য দরকার উঁচু জায়গা যেখানে পানি জমার সম্ভাবনা থাকবে না।

কারণ পেঁপে গাছের গোড়ায় একদিন পানি থাকলেও গাছটি নষ্ট হয়ে যেতে পারে।আবার হাইব্রিড পেঁপে অনেক ভাইরাসে আক্রান্ত হলেও জায়ান্ট পার্ল পেঁপে খুব একটা ভাইরাসে আক্রান্ত হয় না। আর যে কোন পরিবেশের জন্য সহনশীল। মিস্টার ইসলাম বলছেন, যে এ সব বিষয় চিন্তা করেই তিনি পুকুরের পাড়ের উঁচু জমিকে বেছে নিয়েছিলেন।

"সেখানকার মাটিও অনেক বেশি উর্বর ও পুষ্টিমান সম্পন্ন। আর সাথে জৈব সার দিলে উর্বরতা আরও বেড়ে যায়"।

 

 

 

ভালো ফলনের জন্য দরকার বিশেষ কৌশল

 

ড. নজরুল ইসলাম বলেন, এক একটি পেঁপে গাছে এক মৌসুমে সর্বোচ্চ চার মন পর্যন্ত পেঁপে হতে পারে। এর মধ্যে প্রথম দিকের পেঁপেগুলো ৭/৮ কেজি ওজনের হয়। কখনো কখনো দশ কেজি পর্যন্ত হতে পারে একটি পেঁপের ওজর। এর মধ্যে প্রথম দিকের পেঁপেগুলো ৭/৮ কেজি ওজনের হয়। কখনো কখনো দশ কেজি পর্যন্ত হতে পারে একটি পেঁপের ওজর।

আর দ্বিতীয় ধাপে যে পেঁপে পাওয়া যায় ওই একই গাছ থেকে সেগুলো ৪/৫ কেজি ওজনের হয়ে থাকে। "তবে এক বছরে ফল সংগ্রহের পর দ্বিতীয় বছরের পর নতুন করে গাছ রোপণ করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। তাহলে আবার প্রথম দফার মতো বড় সাইজের পেঁপে পাওয়া যাবে"।
মিস্টার ইসলাম বলেন, চারা বোনার পর ছয় মাসের মধ্যে ফল বাজারে নেয়ার উপযোগী হয়।
"আমার কাছ থেকেই অনেকে এখন চারা বীজ নিচ্ছে। কিছুদিন আগে তিন হাজার বীজ করলাম। আশা করি এই ফলটি পেঁপের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি সাধারণ মানুষের কাছে এটিকে আরও সহজলভ্য করে তুলবে," বলছিলেন মিস্টার ইসলাম।

 

 

 

প্রিয় পাঠক, আপনিও হয়ে উঠুন অবসর সময়ের অনলাইন সাংবাদিক। আপনার লেখালেখির প্রতিভা কে অবসর সময়কে কাজে লাগিয়ে হয়ে উঠতে পারেন রকমারি নিউজ এর অনলাইন সাংবাদিক। লাইফ স্টাইল , ব্যবসা , উদ্যোগ , সচেতনতা, ফ্যাশন, স্বাস্থ্য, ভ্রমণ অভিজ্ঞতা , নারী, ক্যারিয়ার, পরামর্শ, এখন আমি কী করব, খাবার, রূপচর্চা ও ঘরোয়া টিপস, লেখাপড়া , গুজব কোন সংবাদ, তাৎক্ষণিক কোন ঘটনা বা অভিজ্ঞতা ইত্যাদি যে কোন বিষয় নিয়ে লিখুন এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ছবি ও ভিডিও সহ (যদি থাকে) ইমেইল করুন এই ঠিকানায় - info@rokomari.news

লেখাটি আপনার নামে প্রকাশ করা হবে। আপনার সেই লেখার লিংক সহজেই সবাইকে শেয়ার করে দিতে পারবেন। এছাড়া, ইমেইল না করেও আপনি খুব সহজে রকমারি অনলাইন পোর্টালে লেখা সাবমিট করে দিতে পারবেন । আপনার প্রতিটি লেখা আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

অনলাইন পোর্টাল এ লেখা সাবমিট করতে এখানে Click করুন Submit News

 

 

 

Comment / Reply From